তিনি মা পতাকাবাহী। লড়াকু যোদ্ধা মা। এই মাকে অনেকেই স্বচক্ষে দেখেছেন। দেখুন তো আপনারা চিনতে পারেন কিনা! সশস্ত্র নয়,শুধু পতাকার জোরে লড়েছিলেন এই মা!
মা, আমার মা
তমাল সাহা
স্বাধীনতা পেয়েছি মা!
আমরা তো এখনও ভ্রষ্টা।
বল্ তো মা
কে রেখেছিল তোর নাম—
এমন দূরদ্রষ্টা?
দেশনন্দিনী তুই,
বন্দিনীর কান্না শুনিস দিনে রাতে,
রণরঙ্গিণী হয়ে উঠলি মেতে
সেদিন বিয়াল্লিশের প্রভাতে।
ভারত ছাড়ো! উদ্দাম নৃত্যে
তখন তুই রুদ্রবালা নটরাজিনী।
পুলিশের লাঠিচার্জ চলে অবিরাম—
বাতাস বলে মাতঙ্গিনী! মাতঙ্গিনী!
এতো দুঃসাহস! কে এই বুড়ি?
তমলুক হবে স্বাধীন রাষ্ট্র?
স্পর্ধা বেড়েছে তোর বড়ো
শাসক কোনোদিন হয় দিগভ্রষ্ট?
মা! তখন তোর বয়স তো
মাত্র তিয়াত্তর।
কটি গুলি খেয়েছিলি তুই?
তিন-তিনটি–দুহাতে, কপালে।
তারপরও
আগুনের নল ছুটে যায় তোর দিকে…
রাষ্ট্র সঠিক চিনেছে চিরশত্রু আসামিকে।
তখনও তুই পতাকাটি হাতে ধরে
নীলচক্রটি যেন সুদর্শন চক্রের মতো ঘোরে।
তুই হাঁটু ভেঙে পড়ে যাস,
শিরদাঁড়া ঠিক রাখিস ধরে—
তখনও
পতাকাটি পড়ে না মাটিতে,
তোর দুর্ধর্ষ হাতে ওড়ে।
মা তুই!
অবিস্মরণীয় দৃশ্য ঘটিয়েছিলি তমলুকে,
কাঁকড় মেশানো লাল ঘাটিতে।
ভেঙে চুরমার করে দে মা!
আমাদের আলসেমির হাই।
মা! মা! তোকে আবার চাই!