অবতক খবর,১০ এপ্রিল,মলয় দে,নদিয়া:- ছয় সাত মাস আগেও বেঁচে ছিলেন মহিলা। মেয়ের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন তিনি। তারপর মাঝে কী হয়েছে কেউ জানে না। কোনও আত্মীয় খোঁজ নিলে মেয়ে দোলা বলতেন, মা বাড়িতে নেই, কলকাতায় গিয়েছেন। কাউকে কাউকে বলতেন মা অসুস্থ। তবে আসলে যে ঠিক কী ঘটেছে, তা জানতেন না কেউই। শনিবার সামনে এল পুরো ঘটনা। এক আত্মীয়া এ দিন দোলার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁর মা মন্দিরার খোঁজ করেন। প্রথমে একই উত্তর দেয় দোলা। দিনের পর দিন বৃদ্ধা বাড়িতে নেই, এ কথা শুনে সন্দেহ হয় ওই আত্মীয়ার। তিনি জোর করে অন্য ঘরে প্রবেশ করেই দেখেন পড়ে রয়েছে কঙ্কাল। অর্থাৎ দোলার মা মন্দিরা মারা গিয়েছেন অনেক দিন আগেই। ঠিক কতদিন আগে মৃত্যু হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। সেই কঙ্কাল উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।
নদিয়ার ধুবুলিয়া থানা এলাকার ঘটনা। মৃত মহিলা নাম মন্দিরা দাস, বয়স প্রায় ৫৬ বছর। মেয়ে দোলা দাস, মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহের সঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করতেন বলে জানা গিয়েছে। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ এলাকা ঘিরে রেখেছে।
পুলিশের অনুমান, প্রায় ছ’মাস ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রাখেছিলেন মেয়ে। শনিবার সন্ধ্যায় মৃতার এক আত্মীয়ার কাছে খবর পেয়ে ধুবুলিয়া থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। অভিযোগ, মেয়ে দোলা মায়ের মৃত্যুর খবর কোনও আত্মীয় বা প্রতিবেশীকে জানতে চাননি। প্রতিবেশীরা তাঁকে মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলতেন, কলকাতায় আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ধুবুলিয়া থানার পুলিশ।
এলাকায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখার অফিসে পরিচারিকার কাজ করতেন দোলা। মায়ের দেহ বাড়িতে ফেলে কাজেও যেতেন তিনি। এ ছাড়া আর অন্য কোথাও বেরতেন না। নিজে রান্না করে খেতেন, সবসময় বন্ধ রাখতেন দরজা-জানালা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর দোলা জানান, মাকে দুধ গরম করে কেতে দিতেন তিনি। তারপর আর কবে মায়ের মৃত্যু হয়েছে তা নাকি তিনি জানতেন না। দোলা বলেন, মা ওই ঘরে শুয়ে বলেছিল, আমি সুস্থ হয়ে উঠে আসব ঠিক। মৃত্যু হলেও তা যাতে কাউকে না জানান, সেই পরামর্শই নাকি দোলাকে দিয়েছিলেন তাঁর মা। মেয়ের দাবি, মা তাঁকে সাবধান করে বলেছিলেন, মৃত্যুর খবর পেলে সবাই লুঠেপুটে খাবে, তাই কাউকে জানানোর প্রয়োজন নেই। তবে কী কারণে মায়ের দেহ এ ভাবে বাড়িতে ফেলে রাখলেন তিনি, তা স্পষ্ট নয়।