বিপ্লবী অরুণা আসাফ আলির আজ জন্মদিন। তিনি ১৯৫৪ সালে কমিউনিস্ট নেতা নিরঞ্জন সেনগুপ্ত বনাম কংগ্রেসের মৈত্রেয়ী দেবীর নির্বাচনী লড়াইয়ে কাঁচরাপাড়ার সার্কাস ময়দানে ও হালিশহর ক্রেগ পার্কে বক্তৃতা দিয়ে গিয়েছিলেন
যে মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি
তমাল সাহা
যে মেয়েটি ১৬ জুলাই এসে ২৯ জুলাই চলে গিয়েছিল অথচ আমাদের কাছে ছিল ৮৫ বছর
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটি দৃঢ় পায়ে কোন দিকে হেঁটে যাচ্ছিল তা কেউ বুঝতে পারেনি
গোরা সৈন্যদের পাহারা এড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল,গোয়ালিয়ার ট্যাংক ময়দানে তখন উড়ছিল ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা।
সবাইকে চমকে দিয়ে দ্রুত নামিয়ে দিল সেই পতাকা আর দ্রুততার সঙ্গে উড়িয়ে দিল তিরঙ্গা পতাকা
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটি গ্রেপ্তার হয়ে তিহার জেলে রাজনৈতিক বন্দিদের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য অনশন করেছিল আর তারপর তাকে আম্বালা জেলের অন্ধ কুঠুরিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটি নেতৃত্ব দিয়েছিল সেই আন্দোলনে যার স্লোগান ছিল– করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে আর যার নাম হয়ে গিয়েছিল আগস্ট আন্দোলনের রাণী
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটি অজ্ঞাতবাসে ছিল, তাকে ধরে দিতে পারলে পাঁচ হাজার টাকা ইনাম– এই ঘোষণা জারি করেছিল লালমুখো ইংরেজ।
পাল্টা সেই মেয়েটি বলেছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রদ করো তবেই আত্মসমর্পণ
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটি ব্রাহ্মণ্যবাদকে সম্পূর্ণ তুড়ি মেরে জাত ধর্ম বর্ণকে উপেক্ষা করে ১৯ বছর বয়সে নিজের থেকে ২৩ বছরের বড়
এক ডানপিটে পুরুষকে সহযোদ্ধা হিসেবে বরণ করে নিয়েছিল
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটির দাম্পত্য জীবনের এই শুভ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মহাত্মা গান্ধী জহরলাল নেহেরু আবুল কালাম আজাদ রাজা গোপালাচারি আর সরোজিনী নাইডু
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটি ইনকিলাব পত্রিকা সম্পাদনা করতো আর কমিউনিস্ট পার্টিতে নাম লিখিয়েছিল
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
যে মেয়েটি বলেছিল, অহিংস না সহিংস সেটা বড় কথা নয়, এই ক্রান্তিকালে মুক্তি সংগ্রামে নেমে পড়াটাই বড় জরুরি
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।
ভালোবাসা প্রত্যয়ী হলে মানুষই বড় হয়ে যায়।
যে মেয়েটি কত সহজেই গঙ্গোপাধ্যায় থেকে হয়ে গিয়েছিল আলী
সেই মেয়েটির নাম আমি ভুলে গিয়েছি।