আজীবন তিনি মানুষের রাজনীতি করেছেন। জীর্ণ পুরাতন চেতনায় দিয়েছেন চরম আঘাত। আন্তর্জাতিকে আলোড়ন সৃষ্টিকারী নকশালবাড়ি আন্দোলনের স্রষ্টা। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চির উন্নত শির চারু মজুমদার।
২৮ জুলাই ছিল তাঁর প্রয়াণ দিবস।
ছবিটি এঁকে দিয়েছেনঃ
অভিজিৎ সেনগুপ্ত
রাজনীতি! একটি জীবন তোমাকে দিলাম
তমাল সাহা
দেয়ালগুলোও যেন সোচ্চারে স্লোগান দিচ্ছিল,
‘গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরো
রাইফেল হাতে দুর্গ গড়ো’।
ডাক দিয়েছিলেন তিনি।
কল-কারখানা, অস্ত্রাগার—
সব আমাদের, শহর হবে অবরুদ্ধ।
কৃষক-কমরেড হাতে হাতে
বিলি হবে রাইফেল, চলবে গেরিলা যুদ্ধ।
ডাক দিয়েছিলেন তিনি।
তামাম ভারতবর্ষ জুড়ে
বজ্রনিনাদে উচ্চারিত হয়েছিল
একটি নাম—
হে রাজনীতি!
একটিই তো জীবন
তোমাকে দিলাম।
লালবাজার…..
বারো দিনের রাষ্ট্রীয় অত্যাচার
তুড়ি মেরে পেরোলেন
দেখলেন সামনে আগুনের পাহাড়
হাঁটতে শুরু করলেন তিনি
আজও হেঁটে চলেছেন….
পৃথিবীর সবচেয়ে
রোগা পাতলা মানুষ তিনি।
চরম শ্বাসকষ্ট ছিল তার কিন্তু
মানুষে ছিল অগাধ বিশ্বাস।
এখনো তার নাম নিয়ে সূর্য ওঠে
দিগন্তে ছুটে যায় দীপ্র বাতাস…
ঝাড়খণ্ড মালভূমি, বস্তার জঙ্গল,
দণ্ডকারণ্যের আকাশ
এখনও লালে লাল—
রাত্রির গর্ভে আড়মোড়া ভাঙে
চোখবোজা শিশু সকাল।
জ্বলে নকশালবাড়ির দাবানল
সশস্ত্র চেতনার ফসল।
অভ্যাস সুদৃঢ় হলে সে কি
ছাড়া যায়?
এখনো তার কন্ঠ ভাসে হাওয়ায়…
তিনি তো দায়িত্ববান
আজও ডাক দিয়ে যান—
ভুখা মানুষ অস্ত্র ধরো
সর্বহারা-রাজ কায়েম করো।