শহিদ
তমাল সাহা
এখন কোনো স্বাধীনতার যুদ্ধ চলছে না,
তবুও মানুষ শহিদ হয়ে যাচ্ছে!
শহিদ বিষয়টা আসলে আমার বাবা আমাকে ভালো করে বোঝাতে পারেনি।
বোঝাতে গিয়ে অনেকটাই সংকীর্ণ করে ফেলেছে।
দেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পরও কেন মানুষেরা শহিদ হয়,
তা আমার বাবা বলে যায়নি।
স্বাধীনতার পর সবকিছুই পাবো বলে আমার বাবার ধারণা ছিল।
তাই তিনি বলেছিলেন এরপর আর কেউ শহীদ হবে না,
শহিদ হবার প্রয়োজনই পড়বে না,
কোনো মায়ের কোল খালি হবে না।
মূল্য শব্দটি বোঝাতে গিয়ে আমার বাবা বলেছিল, আগে যারা বিপ্লবী ছিল পালিয়ে পালিয়ে বেড়াত,তারাই সাধারণত শহিদ হতো।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য মাথার মূল্যও ধার্য করা হতো।
শাসক বিপ্লবীদের গুলি করে মারতো অথবা
বিচারে ফাঁসির দড়ির গলায় পরে তারা শহিদ হতো।
এখন তো স্বাধীনতার যুদ্ধ নেই!
তবে কোনো দলের কেউ গুলি খেলে শহিদ হয়ে যায় কী করে?
শহিদ কী বাজারি পণ্য?
তারা তো অমূল্য, তাদের আত্মত্যাগের মূল্য ২ লক্ষ টাকা হয় কী করে?
এখন কোনো বিপ্লবী পার্টি নেই, সবই দল।
এখন আবার ক্ষমতাশীল দলের কেউ না হলে সে শহিদ হয় না এবং শহিদের বাজারি মূল্যও পায়না।
আসলে শহিদের অর্থমূল্য বলে কিছু হয় না,
শহিদেরা কোনদিনও পণ্য হতে পারে না।
ভোট কত নিষ্ঠুর নির্মম দেখো, শহিদ শব্দটিকে কেমন অপমান করে!
ক্ষুদিরাম প্রফুল্ল চাকী মাস্টারদা মঙ্গল পাণ্ডে ভগৎ সিং কী বাণিজ্যিক পণ্য হতে পারে!