শাবানা পারভিন। এই কঠিন দুঃসময়ে লড়াই করে বেঁচে উঠল। দাঙ্গার মধ্যেও সৃজনের গল্প। নতুন প্রজন্ম দাঙ্গাকে লাথি মেরে মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে এল।
শাবানা পারভিন
তমাল সাহা
দুঃসময়–
ভারতের বড়ই দুঃসময়, খুবই দুর্দিন
তার মুখোমুখি হলো শাবানা পারভিন।
কারোয়াল নগর মুসলিম মহল্লা
গেরুয়া ফেট্টিবাজদের সে কী উন্মত্ত হল্লা!
হল্লা মানেই তো, গদ্দারো কো মারো গোলি।
আর নয় তো,লাগাও আগ। ভাগো কাটোয়া লোগ,হিয়াসে ভাগ্।
আশ্রয়ে জ্বলে ওঠে আগুন।
ঘর থেকে ছুটে পালাচ্ছিল শাবানা পারভিন।
পেটের ভেতর তার খলবলে শিশু।
চোখে অন্ধকার,
বাইরে অন্ধকার দেখা যায় না কিছু।
সেই পেটে পড়ল
দুঃশাসনীয় লাথের পর লাথ।
শাবানা কাতরায়,
দূরে ছিটকে যায় তিন হাত।
পেট চেপে ধরে শাবানা।
বাচ্চাটা কি বেঁচে আছে?
বেঁচে আছে! বেঁচে আছে!
শাবানার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়,
শাবানা নিথর, জ্ঞান হারায়।
মানুষ আছে গো এখনো,
মানুষ আছে পাড়ায়।
মানুষের মতো মানুষেরা চলে আসে
শাবানাকে নিয়ে যায় নিরাময় আবাসে।
আল হিন্দ হাসপাতাল— ডাক্তাররা ছেড়ে দিয়েছিল আশা।
আগুনে পুড়ে গিয়েছে সব, ঘরবাড়ি বাসা।
শেষ পর্যন্ত অনেক লড়াই, দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে
আগুন থেকে উঠে এসেছে নতুন শিশু ,
সেদিন ছিল বুধবার।
ধ্বংসের ভিতরে সৃজনের বার্তা এসেছে আবার।
দাঙ্গার দিকে হাত-পা ছুঁড়ে দিয়ে,
মায়ের পেট থেকে ঠেলে বেরিয়ে এসেছে জরায়ুভেদী জাতক।
বলে আয়! আয় রোখ্ দেখি
রে শয়তান ঘাতক!