অবতক খবর শিলিগুড়িঃ আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা সঠিক ভাবে তৈরি হয়নি বলে আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।গত শনিবার সর্বদলীয় বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শোনার পর পুরনো তালিকা সংশোধন করে নতুন তালিকা প্রকাশিত হয়। আর আজ প্রকাশিত হল প্রশাসনিক তরফ থেকে শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের সংরক্ষণের তালিকা। ইতিমধ্যেই বাংলার সময়ে আমরা ওই তালিকা তুলে ধরেছি সবার প্রথমে। নতুন তালিকার সাথে পুরনো খসড়া তালিকার কোনো সম্পর্কই নেই। নতুন এই তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিএমের কয়েকজন কাউন্সিলর এর উপরে করলেও পুরোপুরি সুরক্ষিত হয়ে গিয়েছেন কংগ্রেসের 4 কাউন্সিলার সংশোধিত তালিকা নিয়ে কোন দলের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
গত মাসে শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর সেই তালিকা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছিল। খসড়া তালিকা হিসেবে ডান বাম প্রায় সব রাজনৈতিক দলই অভিযোগ তুলেছিল। ওই তালিকায় কংগ্রেসের চারজন কাউন্সিলরের মধ্যে তিনজন নিজের ওয়ার্ডে আর ভোটের লড়াইয়ে আসতে পারছিলেন না সেই কারণেই কংগ্রেসের একাংশ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিল। এরপর খবর ছিল 10 ফেব্রুয়ারি আসন সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে। কিন্তু তার আগেই গত শনিবার প্রকাশ হয়ে গেল শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের সংরক্ষণের তালিকা।আজ প্রশাসনিক তরফে সেই তালিকা প্রকাশ হয়। কিন্তু নতুন তালিকায় বিপাকে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের 37 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রঞ্জন শীল শর্মা 37 নম্বর ওয়ার্ডটি তপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। সেই কারণে 37 নম্বর ওয়ার্ডে আর লড়াইয়ে আসতে পারবেন না রঞ্জনবাবু। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার এর কুড়ি নম্বর ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গেছে ফলে পুর নিগমের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডে আর দাঁড়াতে পারছেন না। সমস্যায় পড়েছেন 42 নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম কাউন্সিলর দিলীপ সিং। তিনি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। 42 নম্বর ওয়ার্ডটি তপশিলি উপজাতি জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন সিপিআইএম কাউন্সিলর তথা মেয়র পরিষদ মুকুল সেনগুপ্ত।
46 নম্বর ওয়ার্ডটি তপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। শহরে গুঞ্জন ছিল শিলিগুড়ি পুর কর্পোরেশন নির্বাচনে 17 নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটের লড়াইয়ে লড়বেন তৃণমূল কংগ্রেসের মেয়র পদপ্রার্থী পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। দলের আশা ছিল ওই ওয়ার্ডটি এবার জেনারেল হবে। বর্তমানে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এর স্ত্রী শুক্লা দেব। কিন্তু ওই ওয়ার্ডটি আবার মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। শহরে বর্তমানে গুঞ্জন রয়েছে তাহলে কি 15 নম্বর ওয়ার্ড থেকেই ভোটের লড়াইয়ে নামতে চলেছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব? 15 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন প্রয়াত অরবিন্দ ঘোষ। ওই ওয়ার্ডে বেশ কিছু দিন যাবত গুঞ্জন রটেছিল 15 নম্বর ওয়ার্ড থেকে কর্পোরেশন ভোটে দাড়িয়ে কাউন্সিলর হয়েই শিলিগুড়ি পুর নিগমের মেয়র হতে পারেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। নতুন তালিকায় 15 নম্বর ওয়ার্ড জেনারেল হয়ে যাওয়ায় সেই গুঞ্জনে সিলমোহর পড়তে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অপরদিকে কিছুদিন আগে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছিলেন দল যা নির্দেশ দেবে সেই হিসেবেই তিনি কাজ করবেন । এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি পর্যটন মন্ত্রী কে ভোটের লড়াইয়ে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কিনা। মন্ত্রী ভোটের লড়াইয়ে নামলে সবচেয়ে সেফ সিট হবে 15 নম্বর ওয়ার্ডটি । আর যদি মন্ত্রীকে ভোটের লড়াইয়ে না নেমে লড়াইয়ের রণকৌশল ঠিক করতে বলা হয় সে ক্ষেত্রে 15 নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের লড়াইয়ে নামতে পারেন শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের বিরোধী দলনেতা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেও গুঞ্জন রয়েছে শিলিগুড়ি শহরে।
আবার ওই ওয়ার্ডেই ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়াতে পারেন প্রাক্তন প্রয়াত কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষের স্ত্রী বলেও গুঞ্জন রয়েছে ।অপরদিকে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে চিন্তায় ফেলেছিল পুরনো খসড়া তালিকা। কিন্তু নতুন তালিকা প্রকাশ হবার পর মেয়র পুনরায় 6 নম্বর ওয়ার্ড এই নেমে পড়েছেন ভোটযুদ্ধের কাজে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হল কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুর নিগমের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকারের। তিনি কুড়ি অথবা তেইশ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াবেন এমনটাই পরিকল্পনা ছিল বলে শহরে গুঞ্জন উঠেছিল। কিন্তু এই দুটি ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। ফলে রঞ্জনবাবু কোথায় দাঁড়াবেন সেই নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। অপরদিকে রঞ্জন শীল শর্মা কোন ওয়ার্ড থেকে ভোটে দাঁড়াবেন তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা কল্পনা। সূত্রে খবর পুনরায় 36 নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে দাঁড়াতে পারেন রঞ্জন শীল শর্মা। আবার তৃণমূল শিবিরে গুঞ্জন রয়েছে 40 নম্বর ওয়ার্ডের ভোটে দাঁড়ানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন রঞ্জন শীল শর্মা।
শহরের রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে 40 নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে দাঁড়াতে পারেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবও।অপরদিকে সদ্য বিজেপিতে যোগদান কারী তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা জয়দীপ নন্দী 35 নম্বর ওয়ার্ড থেকে পুরনিগম ভোটে লড়াই করার চিন্তাভাবনা নিয়েছিলেন বলে গুঞ্জন ছিল ।তবে তা আর হল না কারণ ওই ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। এখন এটাই দেখার শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন ভোটে জয়লাভ করে বোর্ড দখল করতে কোন রাজনৈতিক দল কি পন্থা অবলম্বন করে