এখনো পুজোয় মাতো! উপমহাদেশ জুড়ে হা-হুতাশ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ধর্ষিতা সতীর লাশ।

সতীপীঠ

তমাল সাহা

তখন

আলো-আঁধারি অরণ‍্য-সংকুল গিরিকন্দর থেকে নেমে আসছিল বেগবান জলপ্রবাহ—

বাপের বাড়িতে উমার দেহ পড়তে থাকলো

খন্ড বিখন্ড হয়ে—

একে একে উড়ে এসে পড়ল নাভিমূল,যোনিমুখ,স্তনভার, জঙ্ঘা,নিতম্ব,অনামিকা, বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ।

এবার পড়ল

পার্কস্ট্রিট,কাটোয়া, কামদুনি,ফালাকাটা,খরজুনা, রাণীতলায়।

উমা বলতে থাকল

আরো পড়বে কোথায় কোথায়।

তখন,ঢাকের উদ্দাম তালে

বেজেই চলেছে বলির বাজনা।

 

কামদুনি জলার ধারে পড়ল জংঘা থেকে নাভিমূল চেরা অংশ,

গেদের হলুদ বনে পড়ল বিবস্ত্র শরীর,

খরজুনার পাট ক্ষেতে পড়ল অর্ধনগ্ন দেহ,

ক্ষতবিক্ষত শরীর পড়ল

ধুবুলিয়ার সেগুন জঙ্গলে,

দাইহাট-ক্ষেত মজুরের ঝুপড়িতে পড়ল খোবলানো মুখ,

সালকিয়ার গোলাবাড়িতে পড়ল আগুনপোড়া উন্নত বক্ষ,

এথেলবাড়ির চাবাগানে পড়ল

মুখে কাপড়-চাপা লন্ডভন্ড জানুদেশ,

ফালাকাটায় পড়ল গুলিবিদ্ধ এফোঁড় ওফোঁড় মাথা।

মহাষ্টমীর অন্তিমলগ্নে

যখন জ্বলে উঠছে সন্ধিপুজোর

একশো আটটি আকাশচুম্বী প্রদীপশিখা

উমা মন্ডপ থেকে নেমে এলো জনমধ্যে,

তাঁর কন্ঠে ধ্বনিত হল—

একান্নপীঠ এবার বিস্তৃত হবে সহস্রাধিক—

এই দেশ,এই কাল পূর্ণ হয়ে যাবে পুণ‍্যতীর্থে।

দেখুন, দেখুন এক পুণ্যলোভাতুর কবি

কেমন আগেভাগে বেরিয়ে পড়েছে

সতীপীঠ দর্শনে।